দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন তথা টংক আন্দোলনের মহিয়সী নারী হাজংমাতা কমরেড রাশিমণি’র ৭৯তম শহীদ দিবস পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) দুর্গাপুর উপজেলা সংসদ ও তার অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে শুক্রবার দিনব্যপি এ দিবস পালিত হয়।
এ উপলক্ষে দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রামে হাজংমাতা রাশিমণি স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন শেষে সিপিবি দুর্গাপুর উপজেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক রুপন কুমার সরকারের সঞ্চালনায়, কমরেড অবনী কান্ত হাজং এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন, সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, খেটে খাওয়া মানুষের আস্থারস্থল কমরেড ডাঃ দিবালোক সিংহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, সিপিবি দুর্গাপুর উপজেলা সংসদের সভাপতি আলকাছ উদ্দীন মীর, সিপিবি নেতা শামছুল আলম খান, জুয়েল রানা, মোরশেদ আলম, আদিবাসী নেত্রী কমরেড পার্বতী রিছিল, কমরেড নিরন্তর বনোয়ারী, য্বু ইউনিয়ন সভাপতি কমরেড নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্র ইউনিয়ন নেতা নুরে আলম প্রমুখ। আলোচনা শেষে হাজং সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী তাদের ঐতিহ্য ও কৃষ্টি তুলে ধরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। এছাড়া বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি ও স্থানীয় সংগঠন গুলো নানা আয়োজনে এদিবস পালন করে।
বক্তারা বলেন, ১৯৩৭ সালের দিকে রাশিমণি হাজং টংক আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। টংক আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্য হন। রাশিমণি ছিলেন এ আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী নেতা। কৃষক সমিতির জঙ্গি কর্মী হিসেবেও তিনি সুপরিচিত ছিলেন। অন্যান্য নারী প্রজারা রাশমণি’কে দেখেই আন্দোলনে উৎসাহিত হয়। অনেকেই টংক আন্দোলন বাহিনীতে যোগ দেন। ধীরে ধীরে হাজং নারী পুরুষের ঐক্যে টংক আন্দোলন বিট্রিশ সৈন্যদের কাছে ভীত ও হিংস্র করে তোলে।
টংক আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ হল রাশিমণি হাজং। নিঃসস্তান হয়েও রাশিমণি আজ হাজংমাতা। হাজং-বাঙালি নির্বিশেষে সকলের পূজনীয়। সমগ্র নারী বিপ্লবের পথ নির্দেশক। শুধু গাড়ো পাহাড়ের পাদদেশে নয়, হাজংমাতা রাশিমণি আজ সমগ্র নারী সংগ্রামের প্রেরণা। হাজংমাতা রাশিমণি আজ একটি ইতিহাস। এই নারী নেত্রীর জীবনাদর্শ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরতে সকলকে আহবান জানানো হয়।
Leave a Reply